খিচুড়ি রান্না শিখতে বিদেশি প্রশিক্ষণ চান ১,০০০ সরকারি কর্মকর্তা!

News & Event

স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য সবজি বা ডিম খিচুড়ি রান্না করা ও সরবরাহের কাজে প্রশিক্ষণ নিতে এক হাজার সরকারি কর্মকর্তাকে বিদেশে পাঠাতে চায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। মূলত বিভিন্ন দেশের স্কুলগুলোতে বাজার থেকে শুরু করে রান্না করা এবং কীভাবে তা শিক্ষার্থীদের বিতরণ করা হয়, এসব জানতেই এই বিদেশ ভ্রমণের আয়োজন।

ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এর এক বিশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ছাড়াও বিশেষ এই ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন এবং বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন বিভাগের কর্মকর্তারা।

 

ইতোমধ্যে বিদেশে প্রশিক্ষণের প্রস্তাবিত এই “প্রাইমারি স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম”-এ পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। খিচুড়ি রান্না করতে শুধু বিদেশ প্রশিক্ষণই নয়, স্থানীয়ভাবে প্রশিক্ষণের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

প্রস্তাবিত প্রাইমারি স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম এর আওতায় এ প্রশিক্ষণ আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

নতুন এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা। বিশাল ব্যায়ের এ কর্মসূচির আওতায় আগামী পাঁচ বছর দেশের ৫০৯টি উপজেলায় এক কোটি ৪৭ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষার্থীদের মাঝে সপ্তাহে তিন দিন গরম খিচুরি এবং তিন দিন উচ্চ পুষ্টিমানের বিস্কুট সরবরাহ করা হবে।

তবে, প্রস্তাবিত কর্মসূচি থেকে বিদেশে প্রশিক্ষণ বাদ দিতে চায় কমিশন। এছাড়া স্থানীয় প্রশিক্ষণের যৌক্তিকতা নিয়েও ব্যাখ্যা চেয়েছে কমিশন।

এবিষয়ে পরিকল্পনা কমিশন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানায়, প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুষ্টিকর বিস্কুট ও গরম খাবার বিতরণ দেশে নতুন নয়। এ কাজ আগে থেকে করে আসছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় “স্কুল ফিডিং কর্মসূচি” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় দেশের ১০৪টি উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধ্যায়নরত প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৭৫ গ্রাম ওজনের এক প্যাকেট করে উচ্চ পুষ্টিমান সমৃদ্ধ বিস্কুট দেওয়া হচ্ছে।

এটি ২০১০ সালে শুরু হওয়ার ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটি শেষ হচ্ছে আগামী ডিসেম্বরে। এছাড়া জাতীয় স্কুল মিল নীতি ২০১৯ অনুযায়ী চার লাখ ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে সবজি খিচুড়ি ও ডিম খিচুড়ি সরবরাহ করা হচ্ছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এবং চলমান দারিদ্র্য পীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচির প্রকল্প পরিচালক রুহুল আমিন খান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্কুলগুলোতে কীভাবে রান্না হয়, কীভাবে শিক্ষার্থীদের বিতরণ করা হয় তা জানতেই পাঁচ বছরে এক হাজার কর্মকর্তার বিদেশ প্রশিক্ষণ প্রস্তাব করা হয়েছে। পুষ্টিকর বিস্কুটের পাশাপাশি প্রস্তাবিত কর্মসূচির আওতায় দেশব্যাপী রান্না করা খাবার দেওয়া হবে স্কুলগুলোতে।

এ জন্য বিদেশে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, গত বছরে তারা ভারতের বিভিন্ন স্কুল গিয়ে সেখানে কীভাবে রান্নার আয়োজন করা হয় তা দেখেছেন। নতুন প্রস্তাবিত কর্মসূচির আওতায় আরও অধিক সংখ্যাক কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে অভিজ্ঞতার সুযোগ দিতে চান তারা। তবে কোন দেশে যাবেন তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। প্রকল্প অনুমোদনের পর তা ঠিক করা হবে।

বিদেশি প্রশিক্ষণ নিয়ে এলে সরকারি কর্মকর্তারা প্রতক্ষ্যভাবে বাজার, খিচুড়ি রান্না ও সরবরাহে যুক্ত থাকবেন কিনা সে বিষয়ে প্রতিবেদনটিতে কিছু বলা হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *