কোম্পানি আইন নিয়ে আমাদের রয়েছে নানা জিজ্ঞাসা। একটি কোম্পানি গঠন করতে অবশ্যই অনুসরণ করতে হয় দেশের প্রচলিত আইন। কী সেসব আইন? এমন সব আইনি বিষয়ে সমাধান দেবেন অ্যাডভোকেট মো. নজরুল ইসলাম খান। আজ জেনে নেই অচলাবস্থাজনিত কারণে কোম্পানির অবলুপ্তি সম্পর্কে।
কোম্পানি অবলুপ্তির (Winding up) প্রক্রিয়ায় কোম্পানির যাবতীয় সম্পত্তি থেকে পাওনাদারদের (Creditors) পাওনা পরিশোধ করা হয়। অবশিষ্ট অর্থ সদস্যদের মধ্যে বণ্টন করা হয় শেয়ার অনুযায়ী। সবশেষে কোম্পানির আইনগত সত্তার অবসান ঘটে।
যেসব কারণে একটি কোম্পানি আদালত অবলুপ্ত করতে পারে তার মধ্যে কোম্পানি পরিচালনায় অচলাবস্থা (Deadlock) অন্যতম।
সদস্যদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এ বিরোধ মাঝে মধ্যে গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে। তবে সদস্য ও পরিচালকরা যদি সমানভাবে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন সেক্ষেত্রে কোম্পানি পরিচালনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে।
যেমন, সমানসংখ্যক শেয়ার ধারণ করেন এমন দুই সদস্যবিশিষ্ট কোম্পানির সদস্য যদি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন তবে কোম্পানির পক্ষে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। এ পরিস্থিতিকে অচলাবস্থা (Deadlock) বলে অভিহিত করা হয়।
কোম্পানি পরিচালনায় অচলাবস্থা সৃষ্টির পরিপ্রেক্ষিতে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা অসম্ভব বলে প্রতীয়মান হলে এবং অদূর ভবিষ্যতে এ অচলাবস্থা নিরসনের কোনো সম্ভাবনা দৃশ্যমান না হলে আদালত যে কোনো সদস্যের আবেদনক্রমে কোম্পানি অবলুপ্তির আদেশ দিতে পারেন।
একটি সম্ভাবনাময় ও আর্থিকভাবে শক্তিশালী কোম্পানিও অচলাবস্থাজনিত কারণে অবলুপ্তির শিকার হতে পারে।
সদস্যদের মধ্যে তীব্র বিরোধ সত্ত্বেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে যদি সিদ্ধান্ত নেওয়া ও কোম্পানি পরিচালনার সুযোগ থাকে তবে আদালত সাধারণত অবলুপ্তির আবেদন মঞ্জুর করেন না। তবে সৃষ্ট বিরোধের ফলে কোনো সংখ্যালঘু সদস্য অন্যায়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তিনি কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ এর ২৩৩ ধারা অনুযায়ী অন্যায়ের প্রতিকার প্রার্থনায় আদালতে আবেদন উপস্থাপন করতে পারেন।
মো. নজরুল ইসলাম খান
অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
ই-মেইল: nikhan.law.ru@gmail.com
0 মন্তব্যসমূহ