সমাজে যখন কাউকে সফল হিসেবে গণ্য করা হয়, তখন প্রথমেই তার আর্থিক প্রাচুর্যের বিষয়টি সামনে আসে। ‘উনি তো অনেক বড়লোক’ , এই বাক্যটি যেন আজকাল সাফল্যের একমাত্র মাপকাঠি। তবে প্রশ্ন জাগে, কেবল এই ‘বড়লোক’ তকমাটুকুই কি যথেষ্ট? নাকি এর চেয়েও মূল্যবান কিছু অর্জনের আকাঙ্ক্ষা রাখা উচিত?
আর্থিক সমৃদ্ধি নিঃসন্দেহে জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এটি আমাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে, জীবনযাত্রার মান উন্নত করে এবং অনেক সুযোগের দরজা খুলে দেয়। কিন্তু যদি এই প্রাচুর্য অহংকার, স্বার্থপরতা আর অন্যের প্রতি উদাসীনতা নিয়ে আসে, তবে সেই সম্পদ কি সত্যিই কোনো মূল্য বহন করে?
অন্যদিকে, ‘বড় মন’-এর পরিচয় বহন করা মানে হলো সহানুভূতিশীল হওয়া, অন্যের দুঃখে সমব্যথী হওয়া, সাধ্যমতো সাহায্য করা এবং সমাজে ইতিবাচক অবদান রাখা। একজন বড় মনের মানুষ হয়তো অঢেল সম্পত্তির মালিক নাও হতে পারেন, কিন্তু তার হৃদয় থাকে প্রশস্ত এবং অন্যের জন্য ভালোবাসা ও শ্রদ্ধায় পরিপূর্ণ। এই গুণাবলী তাকে সমাজের কাছে আরও বেশি সম্মানিত ও প্রিয় করে তোলে।
যদি আমাকে এই দুটির মধ্যে একটি বেছে নিতে বলা হয়, তবে আমি নিঃসন্দেহে ‘বড় মনের পরিচয়’ কেই অগ্রাধিকার দেব। কারণ একটি বড় মন কেবল নিজের জন্যই শান্তি বয়ে আনে না, বরং আশেপাশে থাকা মানুষজনের জীবনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। বিত্ত হয়তো ক্ষণিকের বাহ্যিক সুখ দিতে পারে, কিন্তু মানুষের হৃদয়ে স্থায়ী জায়গা করে নিতে হলে প্রয়োজন উদারতা ও মানবিক গুণাবলী।
পরিশেষে, আসুন আমরা কেবল ‘বড়লোক’ হওয়ার দৌড়ে না ছুটে, নিজেদের চরিত্রকে উন্নত করার দিকেও মনোযোগ দেই। আর্থিক সাফল্যের পাশাপাশি একটি বড় মন তৈরি করি যা অন্যের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় এবং সমাজে ভালোবাসার বীজ বপন করে। কারণ সত্যিকারের পরিচয় আমাদের বিত্তে নয়, বরং আমাদের হৃদয়ের বিশালতাতেই নিহিত।
0 মন্তব্যসমূহ