ব্যবসা বাঁচাতে হিমশিম খাচ্ছে ট্যুর অপারেটররা

Corporate News News & Event

করোনাভাইরাসের কারণে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পর্যটন ব্যবসা থমকে যায়। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে কক্সবাজারসহ অন্যান্য পর্যটন গন্তব্য সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হলেও পর্যটকদের বিদেশে যাওয়া বন্ধ। বিদেশ থেকেও আসছেন না কোনো পর্যটক। ফলে কঠিন সময় পার করছে দেশের ট্যুর অপারেটর বা ভ্রমণ আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।

ট্যুর অপারেটররা বলছেন, পাঁচ মাস ধরে তাঁরা হাত গুটিয়ে বসে আছেন। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে শুরুতে কর্মী ছাঁটাই ও কম বেতন দিলেও বর্তমানে সঞ্চয় ভাঙছেন তাঁরা। পাঁচ মাস পরও পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। তাই অনেকে মৌসুমি ব্যবসা করে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে সরকারের তরফ থেকেও কোনো সহায়তা মিলছে না। এমনটি চলতে থাকলে অনেকেই ব্যবসা থেকে ছিটকে যাবেন।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) তথ্যানুযায়ী, তাদের নিবন্ধিত সদস্য প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬৮৬। ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো পর্যটকদের দেশে-বিদেশে ভ্রমণের জন্য যাতায়াত, থাকা-খাওয়া, ঘোরাঘুরিসহ সব ধরনের সেবার ব্যবস্থা করে থাকে। কয়েক বছর ধরে ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, ভুটান, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ বাড়তে থাকায় ট্যুর অপারেটরদের ব্যবসা ভালো হচ্ছিল। তবে করোনায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে খাতটি।

জানতে চাইলে ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান মার্কেট এন-ট্রেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ সাফাত উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশের ভেতরে যাঁরা ভ্রমণ করেন, তাঁদের মাত্র ৫ শতাংশ ট্যুর অপারেটরের সহায়তা নিয়ে থাকেন। তাই কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন দর্শনীয় এলাকা ভ্রমণের জন্য খুলে দিলেও আমাদের মতো ট্যুর অপারেটরদের লাভ হচ্ছে না। অন্যদিকে বিদেশের মধ্যে কেবল দুবাই যাওয়ার সুযোগ আছে। সেখানে গেলেও আবার ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হয়। তাই হাত গুটিয়ে থাকা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।’

সৈয়দ সাফাত উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, টিকে থাকতে অধিকাংশ কর্মী ছাঁটাই করে মাত্র দু-তিনজন দিয়ে কোনোরকমে প্রতিষ্ঠানগুলো চালু রাখা হয়েছে। অনেক ট্যুর অপারেটর মধু, আম, মেডিকেল সরঞ্জাম বিক্রির মতো মৌসুমি ব্যবসায় নেমেছেন। আপাতত সুন্দরবন ও টাঙ্গুয়ার হাওরে রাত্রি যাপনের অনুমতি দিলে কিছু ট্যুর অপারেটররা ব্যবসা পাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে পর্যটন মন্ত্রণালয় ও ট্যুরিজম বোর্ডের তথ্যানুযায়ী করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের পর্যটন খাতে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। খাতটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৪০ লাখ মানুষ বেকার হয়ে পড়েছেন। ফলে তাঁদের ওপর নির্ভরশীল প্রায় দেড় কোটি মানুষ আছেন বিপদে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *